নতুন বিশ্বব্যবস্থার ছায়াযুদ্ধ
বর্তমান বিশ্বে সংঘাত আর কূটনীতির রূপ পাল্টে গেছে। আগের মতো সেনাবাহিনী দিয়ে যুদ্ধ নয়, বরং আজ যুদ্ধ হয় অর্থনীতি, মিডিয়া, প্রযুক্তি ও ধর্মীয় আবেগ দিয়ে। আর এই যুদ্ধে সবচেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হলো মধ্যপ্রাচ্য — যেখানে ইসলামি সভ্যতার শিকড়, তেলসম্পদ, এবং নবুওতের কেন্দ্রস্থল রয়েছে।
এই অঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইরান, যার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব এবং বহু আরব দেশ এক অদৃশ্য জোট তৈরি করে ফেলেছে। লক্ষ্য একটাই — ইরানকে প্রথমে নিঃশেষ করা, এরপর পুরো মুসলিম বিশ্বকে বিভাজিত ও দখলমুক্ত করে ফেলা।
ইরান শুধু একটি রাষ্ট্র নয় — এটি একমাত্র দেশ যা এখনও প্রকাশ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করে এবং পশ্চিমা প্রভাবের বাইরে নিজস্ব আদর্শে রাষ্ট্র পরিচালনা করে।
🔹 কেন ইরান টার্গেট?
-
ফিলিস্তিন-লেবানন-ইয়েমেনে সক্রিয় প্রতিরোধ আন্দোলনের মূল অর্থদাতা।
-
পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নে সক্রিয় — পশ্চিমাদের কাছে বড় হুমকি।
-
সুন্নি-শিয়া বিভাজনের কেন্দ্র — যাতে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে।
-
চীন-রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা — যা মার্কিন নিয়ন্ত্রণে বাঁধা সৃষ্টি করে।
“৮০টি পতাকা” — হাদীস ভিত্তিক সেই ভয়ংকর পূর্বাভাস
📖 হাদীস থেকে পাওয়া তথ্য:
একাধিক সহীহ ও হাসান হাদীসে বলা হয়েছে, “৮০টি পতাকা নিয়ে এক বিশাল বাহিনী মদিনার দিকে এগিয়ে আসবে, প্রতিটি পতাকায় থাকবে বারো হাজার সৈন্য।” (সূত্র: মুসলিম, আবু দাউদ)
🔸 এই হাদীসকে অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ শেষ যামানার চূড়ান্ত আক্রমণের প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। অনেকের মতে, এই আক্রমণের আগে একটি বড় মুসলিম শক্তিকে (যেমন ইরান) ধ্বংস করা হবে।
পশ্চিমাদের কৌশল: যুদ্ধ নয়, তিলেতিলে ধ্বংস
🎯 কৌশল ১: অর্থনৈতিক শ্বাসরোধ
-
ইউএস ও ইইউ-এর নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেছে।
-
ব্যাংকিং চ্যানেল (SWIFT) থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করতে না পারে।
-
মুদ্রাস্ফীতি ও অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।
🎯 কৌশল ২: আরব রাষ্ট্রগুলোর ব্যবহারে বিভাজন সৃষ্টি
-
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন — সকলেই এখন ইসরায়েলের সঙ্গে গোপন ও প্রকাশ্য জোটে।
-
মিডিয়ায় ইরানকে “সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক” হিসেবে চিত্রিত করা হচ্ছে।
🎯 কৌশল ৩: ভেতর থেকে ধ্বংস
-
ইরানের অভ্যন্তরে জাতিগত (কুর্দ, বেলুচ, আজারী) বিভাজন বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।
-
বিক্ষোভ ও নারী অধিকার ইস্যুকে আন্তর্জাতিকভাবে উসকে দেওয়া হয়।
🕌 আরব দেশগুলোর আসল ভবিষ্যৎ: নিজেরা শিকার হবে
বর্তমানে যারা ইরানবিরোধী ঐক্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তারাই আগামীকালের লক্ষ্য হবে। হাদীস বলছে:
“এক সময় হারামাইন শরীফাইন (মক্কা ও মদিনা) তীব্র আক্রমণের মুখে পড়বে। সেসময় এক সত্যিকারের খলীফা উঠে আসবে — যিনি হিজাজে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনবেন।”
🔥 কেন আরব দেশগুলোও টার্গেট?
-
ইসলামের প্রতীক স্থাপনাগুলো (কাবা, মসজিদে নববী) এই অঞ্চলেই অবস্থিত।
-
তেলভিত্তিক অর্থনীতি পুরো পশ্চিমা বিশ্বের প্রধান লক্ষ্য।
-
নবীর (সাঃ) বংশ থেকে আগত মাহদীকে ঠেকাতে এই অঞ্চলেই আক্রমণ করা হবে।
ইরানের পতনের পর কী ঘটবে? এক চূড়ান্ত মেরুকরণ
-
মুসলিম বিশ্বের আত্মবিশ্বাস ভেঙে যাবে।
-
আরব দেশগুলো পশ্চিমাদের সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হবে।
-
ইসলামি আদর্শকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে।
-
নবুওতের ভূমিকে অধিকার করার চেষ্টা করা হবে।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাব ও মুক্তিযুদ্ধের শুরু
এই সমস্ত অশান্তি ও আক্রমণের প্রেক্ষাপটে হাদীস অনুসারে ইমাম মাহদী আত্মপ্রকাশ করবেন।
💠 মাহদীর আগমনের প্রেক্ষাপট:
-
বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, ও নৈতিক পতন।
-
হারামাইন আক্রান্ত হওয়ার পর, মক্কায় গোপনে বায়াত গ্রহণ।
-
পশ্চিমাদের ‘৮০ পতাকার’ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু।
-
ঈসা (আঃ) অবতরণ করে দাজ্জালের নেতৃত্বে থাকা বাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত যুদ্ধ করবেন।
এখনো সময় আছে, কিন্তু সময় শেষ হয়ে আসছে
আজকের ভূরাজনীতি দেখলে আমরা বুঝতে পারি, বহু হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী একে একে বাস্তব হয়ে উঠছে। ইরানকে ঘিরে যা শুরু হয়েছে, তা এক বিশাল ধর্মীয়-ভূরাজনৈতিক সংঘাতের প্রাক-মঞ্চায়ন।
👉 মুসলিম উম্মাহ যদি এখনো ঘুমিয়ে থাকে — তবে পরবর্তী শিকার হবে আরব বিশ্ব, হারামাইন, আর ইসলামি আত্মপরিচয়।